ধরার শ্রেষ্ঠ হাসি

সূর্য বাবু তখন গিয়েছে ঢলে রয়েছে রক্তিম বেশে,
ক্লান্ত শরীরে ফিরছি বাড়ি সেদিনের কাজ শেষে।
আসতে পথে নীলদীঘিতে উঠলো মৃদু ঝড়,
ভাবছি তখন, অবশেষে কখন পাব ঘর।
দেখি, জীর্ণ বেশ এলো কেশ আট-নয় এর এক মেয়ে,
খড় কুটা কুড়ে এটেছে, লয়ে যাবে বাড়ী বেয়ে।
মাথায় তুলিতে পড়ে গেল বোঝা আবার তুলিতে যায়,
এভাবে তার দেরি হয়ে গেল এদিকে ওদিকে চাই।
পাশ দিয়ে যায় কোট পরা সা’ব দেখতে অতি বেশ,
বলল খুকি, “বাবু, বোঝা তুলে মম মাথায় কমাও একটু ক্লেশ।”
“মাগো”- লাথি দিল সা’ব খুকি লুটালো ধরার বুকে,
বাবু সা’ব ফিরে চলে গেলে দুরে, চেয়েও দেখেনি তাকে।
দুর থেকে দেখি ব্যাথা ভরা চোখে আমিও অসহায়,
উঠলো কেঁদে – কাঁদেনি কখনও যে মোর পাষাণ হৃদয়।
আমায় দেখে কেঁদে ফেলে খুকি, চাইছে অবাক চোখে,
ভাবে, আমিও হইতো বাবুর মতো লাথি দেব তার বুকে।
ভয়ে ভয়ে চাই বলেনাকো কথা, ফিরালো মুখ খুকি,
থামলো কান্না তার মাথায় হাতটি যখন রাখি।
ছোট্ট একটি বোঝা আমি তুলে দিনু তার মাথায়,
হেসে চলে গেল খুকি, দুরে গিয়ে আবারও ফিরে চাই।
আমার হৃদয় উঠলো কেঁদে যখন পালালো সর্বনাশী,
মনে পড়ে নাকো আমি কোথায় দেখেছি এমন হাসি।
মায়ের হাসি ভুলে গেছি আমি হইতো এটা তাই-ই,
আমার দেখা এ ধরাতে শ্রেষ্ঠ হাসি এটাই।।
০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০

(১২ শ্রাবণ ১৪০৮/কালিশংকর পুর, কুষ্টিয়া)

One Comment on "ধরার শ্রেষ্ঠ হাসি"

মন্তব্য করুন

×
কপিরাইট © ২০০৬-২০২৪ সমকাল দর্পণ. সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েল টেকনোলজিস