অনেকদিন ধরে গুলিয়াখালী যাবো যাবো করে যাওয়া হচ্ছে না। ছোটভাই রিগেলরা ঘুরে আসার পরে যাওয়ার আগ্রহটা আরো বেড়ে যায়। যেহেতু শুক্রবার ছাড়া যাওয় সম্ভব না তাই ১ দিনেই ঘুরে শনিবারে অফিস করার প্লান করলাম সাথে নাপিত্তাছড়া ঝরনা দেখাও যুক্ত হলো। গুলিয়াখালী যাওয়ার সেরা সময় বিকালে আর ঝরনাতে যাওয়ার সেরা সময় সকালে তাই দুটাই ১দিনে ঘুরে আসা যাবে। জুলাই এর প্রায় সব শুক্রবার বিভিন্ন দাওয়াত থাকায় মাসের শেষে এসে প্লান করলাম আগষ্টের ৪ তারিখে যাবো।
প্রথমে ১টি মাইক্রোবাসে ১০ জন ভ্রমণপিপাসু যাবো প্লান করলাম। আমারদের এক্স-কলিগ হামিদ ভাই এবং শাহ-নেওয়াজ ভাই যেতে রাজি হলো এবং সেই মোতাবেক আমার দোস্ত হাসান সহ ১০জন হলো। আমার ১০ জন ধরে একটি মাইক্রোবাস মোটামুটি ঠিক করলাম। এরপরে শনিবার সাভার অফিসের যাবার সময় এবং পরে অফিসো পৌছানোর আরো কয়েকজন ভ্রমণপিপাসু যেতে আগ্রহ প্রকাশ করলো ফলে আমরা ২০জন যাবার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমরা ২টি মাইক্রোবাস ভাড়া করলাম যার ১টি ছাড়বে মিরপুর-১ থেকে আর ১টি ছাড়বে সাভার থেকে। বলে রাখা ভাল প্রথমে আমরা ভোরে রওনা হতে চেয়েছিলাম, পরে ৩ তারিখ রাতে রওনা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম পরবর্তীতে এটাই সঠিক সিদ্ধান্ত হিসাবে বিবেচিত হয়েছে।
সবকিছু ঠিকঠাক মত গোছানার পরে ৩ তারিখ রাত সাড়ে ৯ টায় সাভার থেকে ১ম মাইক্রোবাস এবং রাত ১০:১৫ টায় মিরপুর-১ থেকে ২য় মাইক্রোবাস রওনা দিলাম। মাইক্রোবাস ২টি ছাড়ার পরে টেকনিক্যাল মোড়ে আমরা একত্রিত হয় এবং সাভারের মাইক্রোবাসটি সোজা চলে যেতে বলি কারণ আমাদের মাইক্রোবাস এ পথ থেকে ফজলু ভাই, শাহ-নেওয়াজ ভাই, সাজ্জাদ এবং মাসুদ ভাইকে পিক করি। আমাদের ২০জন সদস্যের মধ্যে আমাদের মাক্রোবাসে ছিলো আমি, হাসান, ফারুক ভাই, হামিদ ভাই, মউদুদ ভাই, অরুপ দা, ফজলু ভাই, শাহ-নেওয়াজ ভাই, মাসুদ ভাই এবং সাজ্জাদ সাভারের মাইক্রোবাস ছিলো মিতুল ভাই, মামুনুর-রশিদ, কামরুল, রিয়াজুল, নুরুদ্দিন, আল-আমিন, জীবন দা, উত্তম দা, এনামুল এবং আকতারুজ্জামান। আমাদের প্লান ছিলো ভোর ৫টায় “নয় দুয়ারিয়া”তে পৌছাবো আমরা ১৫ মিনিট আগেই “নয় দুয়ারিয়া” মোড়ে পৌছে যাই। এরপরে প্লান মাফিক “নয় দুয়ারিয়া মসজিদ” এ ফজরের নামাজ পড়ে ফ্রেশ হয়ে সিডিউল মত ৬টায় রওনা হয় নাপিত্তাছড়া ঝরনার দিকে। মাইক্রোবাস দুটি “নয় দুয়ারিয়া” মোড়ে রেখে যায়। পথে যেতে রেললাইনে নাস্তা করি।
https://plus.google.com/u/0/+MehdiAkram/posts/U9hJj1M2mV5
আমারা যখন ঝরনার কাছে পৌঁছায় শুধু মনে হয়েছে আমরা যেন স্বর্গের এক টুকরোর ভেতর চলে গিয়েছি। সব কিছু ঠিক যেন ছবির মত সুন্দর। বিশাল বিশাল পাথরের ভেতর দিয়ে নেমে এসেছে ছড়ার পানি। দু’পাশে উচু পাহাড়ের দেয়ালে চুমু দিয়ে সেটে আছে সবুজ গাছেরা। এ যেন চির জীবনের মিতালি। নানা রকম চেনা অচেনা পাখির কলতান, অরণ্যর নিস্তব্ধতার মাঝে নানা শব্দ, আদিবাসিদের মাছ ধরা, বাচ্চাদের গোছল করা আরো কত কি। এ যেন চির চেনা জগত ফেলে অচেনার এক জগত।
নাপিত্তাছড়ার এখানে প্রায় ৪টা ঝর্ণা আছে, মূল ঝিরি পথে প্রায় ৩০ মিনিট হাঁটার পর প্রথম ঝর্ণা চোখে পড়বে। সুন্দর ঝর্ণা। প্রথমটি দেখে একটু উপরে উঠলেই দ্বিতীয়টা। এরপর বেশ উপরে উঠতে হবে এবং হাঁটা শুরু পরের ঝর্ণা দেখার জন্য। এই পথ গুলোও সুন্দর লাগবে। কি সুন্দর পানি নামছে উপর থেকে। প্রথম দুইটা একটু ছোট ছোট ঝর্ণা। কিন্তু পরের দুইটা একটু বড়। অনেক উপর থেকে পানি পড়ছে। দেখতে কি ভালো লাগে।
ঝরনা থেকে ফিরে আমরা রওনা হয় সীতাকুন্ডের দিকে। সেখানে জুম্মার নামাজ পড়ে দুপুরের খাওয়া সেরে রওনা হয় গুলিয়াখালীর দিকে। গুলিয়াখালী পৌছায় বিকাল ৩:৩০ টায়।
কবিতার মতই অপরূপ সুন্দর গুলিয়াখালী সৈকতের সোনালি গোধূলি। অল্প কয়েকদিন আগে হলেও মনোরম পরিবেশে বিচটি এখনো অনেকের কাছেই অপরিচিত, তাই এখনো বেশ নিরিবিলি। আর সে কারণেই এখনো অক্ষত রয়েছে অকৃত্রিমতা। এই সৈকতটি অন্য সব সৈকত থেকে একেবারেই আলাদা। সৈকত সম্পর্কিত সকল ধারণা ভেঙে দেবে এর সৌন্দর্য, কারন এর মাটির গঠন। এখানে বিস্তৃত সমভূমি নেই, নেই বালু বরং মাটির মাঝ দিয়ে খালের মতো এঁকেবেঁকে ঢুকে গেছে সমুদ্র। সবুজ ঘাসের ফাঁকে স্রোতের জল ঢুকে পড়া সৈকতটি মুগ্ধ এবং মহিয়িত করেছে আমাদের সবাইকে আর আমরা মন ভরে প্রকৃতি উপভোগের এক অনন্য লীলাভূমি।
বিকাল ৫:৩০ টায় আমরা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। আমি বাসায় পৌছায় রাত ১২:৩০ টায় আর সাভারের মাইক্রোবাস পৌছায় রাত ১ টায়।
ফেসবুক ইভেন্ট লিংক : https://www.facebook.com/events/269136447204385/
গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত: চট্টগ্রামের জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলায় অবস্থিত গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত (Guliakhali Sea Beach) যা স্থানীয় মানুষের কাছে মুরাদপুর সমুদ্র সৈকত নামে পরিচিত। সীতাকুণ্ড বাজার থেকে গুলিয়াখালি সমুদ্র সৈকতের দূরত্ব মাত্র ৫ কিলোমিটার। অনিন্দ্য সুন্দর গুলিয়াখালি সমুদ্র সৈকতকে সাজাতে প্রকৃতি কোন কার্পন্য করেনি। একদিকে দিগন্তজোড়া সাগর জলরাশি আর অন্য দিকে কেওড়া বন এই সাগর সৈকতকে করেছে অনন্য। কেওড়া বনের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের চারিদিকে কেওড়া গাছের শ্বাসমূল লক্ষ করা যায়, এই বন সমুদ্রের অনেকটা ভেতর পর্যন্ত চলে গেছে। এখানে পাওয়া যাবে সোয়াম্প ফরেস্ট ও ম্যানগ্রোভ বনের মত পরিবেশ। গুলিয়াখালি সমুদ্র সৈকতকে ভিন্নতা দিয়েছে সবুজ গালিচার বিস্তৃত ঘাস। সাগরের পাশে সবুজ ঘাসের উন্মুক্ত প্রান্তর নিশ্চিতভাবেই আপনার চোখ জুড়াবে। সমুদ্র সৈকতের পাশে সবুজ ঘাসের এই মাঠে প্রাকৃতিক ভাবেই জেগে উঠেছে আঁকা বাঁকা নালা। এইসব নালায় জোয়ারের সময় পানি ভরে উঠে। চারপাশে সবুজ ঘাস আর তারই মধ্যে ছোট ছোট নালায় পানি পূর্ণ এই দৃশ্য যে কাউকে মুগ্ধ করবে। অল্প পরিচিত এই সৈকতে মানুষজনের আনাগোনা কম বলে আপনি পাবেন নিরবিলি পরিবেশ। সাগরের এত ঢেউ বা গর্জন না থাকলেও এই নিরবিলি পরিবেশের গুলিয়াখালি সমুদ্র সৈকত আপনার কাছে ধরা দিবে ভিন্ন ভাবেই। চাইলে জেলেদের বোটে সমুদ্রে ঘুরে আসতে পারেন।
নাপিত্তাছড়া ঝরনা: চট্টগ্রামের জেলার মীরসরাই উপজেলায় অবস্থিত নাপিত্তাছড়া ঝরনা (Napittachora waterfalls) যা মীরসরাই বাজার পার হয়ে নয় দুয়ারিয়া মোড় থেকে বামে যেতে হবে। নাপিত্তাছড়া ট্রেইল এমন একটা পথ যাতে আপনি পাবেন একটা নয়, দুটো নয়, তিনটা আলাদা ঝর্না এবং ঝিরিপথ, পাহাড়ি ঢাল বেয়ে ওঠার সুযোগ, প্রাকৃতিক ছোট্ট পুল এ ডুব দেয়ার সুযোগ। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার হেটে যেতে হয়। প্রথমে গ্রামের পথ এরপরে ঝরনার ঝিরিপথ। যাওয়ার সময় “নয় দুয়ারিয়া” থেকে বাশেঁর কঞ্চি নিয়ে গেলে ভাল। সাথে ভাল গ্রিপ ধরে এমন সেন্ডেল/জুতা।
পরামর্শ: ভ্রমণ স্থানকে ময়লা ফেলে নোংরা করবেন না। নিজে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বেপারে সচেতন হোন এবং অন্যকে সচেতন করার চেষ্টা করুন। জোয়ার ভাটার সময় জেনে নিন। জোয়ারের সময় হলে বীচের কাছে না থাকাই ভালো। পানির ঢেউ যখন বাড়বে বীচ থেকে চলে আসবেন। আর জোয়ারের সময় পানি উঠে নালা গুলো পূর্ণ হয়ে যায়। তখন পারাপার হতে সমস্যা হতে পারে। আর যেহেতু এটা পর্যটক বান্ধব বীচ নয়, তাই সমুদ্রে নামার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন। সাঁতার না জানলে বেশি দূর কখনো যাবেন না। ভ্রমণকে নিরাপদ করতে প্রয়োজনে ট্যুরিস্ট পুলিশের সাহায্য নিন।
Onek soondor place. sei jaiga
আমারা যখন ঝরনার কাছে পৌঁছায় শুধু মনে হয়েছে আমরা যেন স্বর্গের এক টুকরোর ভেতর চলে গিয়েছি। সব কিছু ঠিক যেন ছবির মত সুন্দর। বিশাল বিশাল পাথরের ভেতর দিয়ে নেমে এসেছে ছড়ার পানি। দু’পাশে উচু পাহাড়ের দেয়ালে চুমু দিয়ে সেটে আছে সবুজ গাছেরা। এ যেন চির জীবনের মিতালি। নানা রকম চেনা অচেনা পাখির কলতান, অরণ্যর নিস্তব্ধতার মাঝে নানা শব্দ, আদিবাসিদের মাছ ধরা, বাচ্চাদের গোছল করা আরো কত কি। এ যেন চির চেনা জগত ফেলে অচেনার এক জগত।
bangla love sms
nice place
আসলেই সুন্দর যায়গা, আবার যাবো পরিবার নিয়ে ইনশাল্লাহ।
Ye ! This Is A Good Blog!
ভাই এখনো যেতে পারিনি কিন্তু যাবো।
যান, ভাল লাগবে।
apnader ke onek onek dhanyabaad
আপনাকেও ধন্যবাদ
Hello There! Have A Good Day!
সবাইকে বসন্তের শুভেচ্ছা, লেখা পরে ভালো লাগলো , ঝর্ণা আমার সব সময় ভালো আগে , দেশের সবগুলো ঝর্ণা মোটামোটি দেখা শেষ ,
ধন্যবাদ
একজন ভাল মানের টুরিস্ট গাইড হবার যোগ্যতা আপনার আছে। লেখা চালিয়ে যাবেন। আর ভালবাসা নিবেন।
ধন্যবাদ
tecnolozy tips and top news
চমৎকার
Thanks a lot for your valuable post.
চমৎকার
Don’t mess up the travel space. Be aware of cleanliness yourself and try to make others aware. Find out when tide breaks. It’s best not to be near the beach when the tide is up. When the water surge increases, you will come from the beach. And during the tide, the water rises and the rivers are full. It may be difficult to cross. And since this is not a tourist-friendly beach, be careful about getting out to sea. If you do not know swimming, do not go too far. If necessary, seek the help of tourist police to secure travel.
Nice Post
Thanks for share