Site icon সমকাল দর্পণ

কম্পিউটারের গতি বৃদ্ধিতে করণীয়

যুগের সবচেয়ে বড় চাহিদা হচ্ছে গতি। আর দ্রুতগতির কম্পিউটার সবাই কাম্য। একই সাথে একাধিক কাজ করলে কাজের গতি কমে যায় বা অনেক সময় কম্পিউটার হ্যং হয়ে যায় এমনটি প্রায়ই শোনা যায়। কম্পিউটারের গতি বৃদ্ধিতে কি করণীয় বা কিসের উপরে কম্পিউটারের গতি নির্ভরশীল তা আমরা কজনেই বা জানি। অনেকে মনে করে শুধু দ্রুতগতির প্রসেসর হলেই কম্পিউটারে দ্রুত কাজ করা যায়। আসলে শুধু প্রসেসরের উপরে কম্পিউটারের গতি নির্ভর করে না।
মাক্রোপ্রসেসরকে মানুষের ব্রেনের সাথে তুলনা করা হয়। মূলত সকল ধরণের ক্যালকুলেশন করে থাকে প্রসেসর। সেক্ষেত্রে কম্পিউটারের গতিতে প্রসেসর প্রধান ভুমিকা রাখে কিন’ শুধু প্রসেসর দিয়েই কম্পিউটারের গতি নির্ভর করে না। ভাল গ্রাফিক্স কার্ড, অধিক র্যাম, পর্যাপ্ত হার্ডডিক্সের ফাকা যায়গা এবং প্রসেসর মিলেই একটি কম্পিউটারের গতি নির্ভর করে।
আমরা যখন একসাথে একাধিক ফাইল নিয়ে কাজ করি তখন প্রসেসর প্রয়োজনীয় এক্সিকিউটবল এবং ডিএলএল ফাইলগুলোকে র্যাম রেখে দেয়। স্বাভাবিক ভাবে আপনার কম্পিউটারের র্যাম যদি ৬৪ মেগাবাইট হয় তাহলে ৬৪ মেগাবাইটের চেয়ে বেশী ফাইল নিয়ে কাজ করা সম্ভব হয়না (এছাড়াও অপারেটিং সিস্টেমের কিছু ফাইল সবসময়ই চলে)। এক্ষেত্রে র্যামকে সাহায্য করে ভার্চুয়াল মেমোরি। ভার্চুয়াল মেমোরি হার্ডডিক্সে এলোকেট করা যায়গা নিজের দখলে রাখে এবং তা র্যামকে ফাইল আদান প্রাদানে (সোয়াপ আউট এবং সোয়াপ ইন) সাহায্য করে, অর্থাৎ আপনি একটি প্রোগ্রাম ওপেন করে রেখেছেন কিন’ কাজ করছেন না সেগুলোকে ভার্চুয়াল মেমোরি র্যাম থেকে সরিয়ে হার্ডডিক্সের এলোকেট করা যায়গাতে রাখে (সোয়াপ আউট)। আবার যখন প্রয়োজন পরে তখন তা র্যামে ফিরিয়ে দেয় (সোয়াপ ইন)। নতুন কিছু ফাইল সোয়াপ আউট করে। আপনার কাম্পিউটারের র্যাম যদি কম হয় তাহলে ভার্চুয়াল মেমোরিকে এভাবে ঘন ঘন এবং বেশী পরিমান ফাইল আদান প্রাদান করতে হয়। হার্ডডিক্সের গতি যেহেতু র্যাম থেকে অনেক কম এবং ভার্চুয়াল মেমোরি হার্ডডিক্সেরই অংশ তাই এর গতিও বেশী নয়। সুতারাং আপনার কম্পিউটারের র্যাম ৬৪ মেগাবাইট হলেও আপনি তার চেয়ে বড় ফাইল (সকল চলন- ফাইলের যায়গা মিলে) চালাতে পারবেন কিন’ সোয়াপের কারণে গতি কম হবে। আর যদি ফাইলগুলোর যায়গা র্যাম এবং ভার্চুয়াল মেমোরি থেকেও বেশী হয় তাহলে লো ভার্চুয়াল মেমোরি’র মেসেস আসবে এবং কম্পিউটার হ্যাং হয়ে যেতে পারে। অতএব গতি বৃদ্ধির জন্য যেমন র্যাম বেশী হওয়া দরকার তেমনই ভার্চুয়াল মেমোরিও বেশী হওয়া প্রয়োজন। এবং প্রত্যেক ড্রাইভে পর্যাপ্ত (শতকরা ১৫ থেকে ২০ ভাগ) যায়গা খালি রাখা উচিৎ।
আবার গ্রাফিক্স কার্ডও কম্পিউটারের গতির জন্য বড় ভুমিকা রাখে। একটি বড় এ্যাপলিকেশনের (থ্রিডি, এ্যানিমেশন বা এডিটিং) ক্ষেত্রে অবশ্যয় বেশী পরিমানের গ্রাফিক্স কার্ড প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে তুলনামূলক কম গ্রাফিক্স কার্ড দিয়ে কাজ করলে কাজের গতি অনেক গুন কম হয়। আপনার কম্পিউটারে সবচেয়ে দ্রুতগতির প্রসেসর, অত্যাধিক র্যাম, পর্যাপ্ত ভাচুর্য়াল মেমোরি এবং অধিক যায়গার হার্ডডিক্স থাকার পরেও যদি গ্রাফিক্স কার্ড কম হয় তাহলে আপনার কম্পিউটার হবে সাধারণ কম্পিউটারের মত ধীরগতির। সমপ্রতি মাইক্রোসফটের বাজারে ছাড়া নতুন অপারেটিং সিস্টেম ভিসতাতে গ্রাফিক্স কার্ডের চাহিদাও বেশী। ভিসতার সকল ফিচার পেতে নূন্যতম ১২৮ মেগাবাইট গ্রাফিক্স কার্ড এবং ৫১২ র্যামের প্রয়োজন। অর্থাৎ ভাল এবং উন্নত গ্রাফিক্স কার্ড, বেশী র্যাম, পর্যাপ্ত ভার্চুয়াল মেমোরি, অধিক যায়গার হার্ডডিক্স এবং দ্রুতগতির প্রসেসরের সম্মিলিত সুবিধা আপনার কম্পিউটারের সর্বোচ্চ গতি নিশ্চিত করবে।

Exit mobile version