সমকাল দর্পণ

কাঙাল হরিনাথের ১১২তম মৃত্যুবার্ষিকী

আজ গ্রামীণ সমাজের নবজাগরণ ও সাংবাদিকতার পথিকৃৎ কাঙাল হরিনাথ মজুমদারের ১১২তম মৃত্যুবার্ষিকী। কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই পালিত হচ্ছে দিনটি। অথচ ঊনবিংশ শতাব্দীর কালজয়ী সাধক, সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও নারী জাগরণের অন্যতম দিকপাল ছিলেন তিনি। ইংরেজ নীলকর, জমিদার, পুলিশ ও শোষক শ্রেণীর বিরুদ্ধে হাতে লেখা পত্রিকা নিয়ে দাড়িয়েছিলেন নিপীড়িত মানুষের পাশে। তার ‘গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা’ গ্রামীণ-স্বার্থ সংরক্ষণে অল্পদিনেই অধিকার বঞ্চিত মানুষের হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল। কৃষক-তাতী-রায়ত-প্রজা ও শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণকর পত্রিকার ভূমিকা বাংলায় আজো দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। আদর্শ সাংবাদিকতা এবং গ্রামবাসীর সঙ্গে মিশে থাকা এ মুখপাত্রটি এখন শুধুই ইতিহাস। প্রতি বছর তার জন্ম এবং মৃত্যুবার্ষিকী আসে। কিন্তু কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ছাড়াই পার হয়। এবারো তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্থানীয়ভাবেও কোনো আয়োজন করা হয়নি। কুষ্টিয়া জেলা শহরেও হরিনাথকে নিয়ে কোনো আয়োজন নেই।
গ্রামীণ সাংবাদিকতা এবং দরিদ্র কৃষক ও সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখের একমাত্র অবলম্বন কাঙাল হরিনাথের স্মৃতি বর্তমানে হারিয়ে যেতে বসেছে। দুই বংশধরের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধের কারণে কাঙাল কুটিরের উন্নয়ন কাজও ঝুলে আছে। অথচ কাঙাল হরিনাথ মজুমদার ছিলেন একজন জীবন সংগ্রামী সাধক ও আলোকোজ্জ্বল মানুষ। এ প্রসঙ্গে কাঙাল হরনাথ স্মৃতি পরিষদের সহসভাপতি মীর আমজাদ আলী বলেন, দুই বংশধর অশোক মজুমদার এবং রামকান্ত মজুমদারের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধের কারণে তার জন্ম বা মৃত্যুবার্ষিকী পালনে কেউ উৎসাহিত হয় না। কারণ কোনো অনুষ্ঠান করতে গেলেই অশোক মজুমদাররা তার বিরোধিতা শুরু করে। তারা এখনো কাঙাল হরিনাথকে নিজেদের সম্পদ মনে করে। অথচ তিনি এখন যেমন জাতীয় সম্পদ, তেমনি তার সম্পত্তিও সরকারের।
সূত্র: যায়য়ায়দিন (১৮-০৪-০৮)

Exit mobile version