ফন্ট তৈরীর কলাকৌশল

আমরা যে কম্পিউটারে বিভিন্ন ফন্ট ব্যবহার করি তা সহজেই আপনি তৈরী করতে পারবেন। এজন্য বিভিন্ন সফটওয়্যার রয়েছে। আমরা এখানে FontCreator সফটওয়্যার দ্বারা ফন্ট তৈরী করা শিখবগ। এ জন্য FontCreator 5.5 সফটওয়্যারটি (৩০ দিনের ডেমো ভার্সন) www.high-logic.com ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করে ইনষ্টল করে নিন।ফন্ট তৈরীর আগে ফন্ট সম্পর্কে কিছুটা ধারণা থাকা দরকার। ফন্ট দুই ধরণের TrueType ফন্ট এবং OpenType ফন্ট। এই সফটওয়্যাররে মূলত TrueType ফন্ট তৈরী এবং সম্পাদনা করা যায়, সুতারাং আমরা TrueType ফন্ট সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো। TrueType ফন্টও আবার দুই ধরণের Unicode (Characters) এবং Symbol। ইউনিকোড (ক্যারেক্টারস) ফন্টে প্রত্যেকটি কী‘র অধীনে বর্ণগুলো থাকে। আপনি যখন A চাপবেন তখন A আসবে, A চাপলে যদি O আসে তাহলে তা সঠিক হলোনা। অর্থাৎ ফন্ট তৈরীর সময় আপনি A গ্লিফে (পোষ্ট স্ক্রিপ্ট) A তৈরী করেছেন। এভাবে প্রত্যেকটি বর্ণ আলাদা আলাদা হবে। আর সিম্বলে এ ধরণের কোন নিয়ম নেই। সিম্বলে .notdef এবং space গ্লিফের পোষ্ট স্ক্রিপ্ট ছাড়াও আর কোন পোষ্ট স্ক্রিপ্ট নেই, ফলে ইচ্ছামত সিম্বল তৈরী করা যায়।

ফন্ট তৈরীর প্রথম ধাপঃ প্রথমে ফন্ট ক্রিয়েটর ৫.৫ ওপেন করুন এবং ফাইল মেনু থেকে নিউ -এ ক্লিক করলে এখানে Font family name -এ ফন্টের নাম দিন এবং Character Set অংশে Unicode অথবা Symbol সিলেক্ট করুন এবং Font style -এ পছন্দের স্টাইল সিলেক্ট করে (Symbol এর নয়) ওকে করুন। এবার ফন্টের নাম ও কপিরাইট সংক্রান্ত তথ্য যোগ করার জন্য টুলস মেনু থেকে অপশনে ক্লিক করে Naming ট্যাব থেকে সকল তথ্য পুরণ করে আসুন। এছাড়াও টুলস মেনু থেকে AutoNaming ক্লিক করলে Automate Naming wizard আসবে সেখানে Font Family Name এবং Font Subfamily Name পূরণ করে Next>> বাটনে ক্লিক করে পরবর্তী ডায়ালগ বক্স থেকে Unique Font Identifier, Full Font Name, Version String এবং Postscript Name পূরণ করে Finished বাটনে ক্লিক করে শেষ করুন।

ক্যারেক্টার ফন্ট তৈরী করাঃ এখন লক্ষ্য করুন উইন্ডোতে অনেকগুলো খালি গ্লিফ (Glyph) আছে যার উপরদিকে উক্ত গ্লিফ এর পোষ্ট স্ক্রিপ্ট নাম দেওয়া আছে (.notdef, space, A ইত্যাদি)। এবার A গ্লিফের উপরে দু‘বার ক্লিক করলে Empty Glyph Index আসবে। এখানে লাল রঙের এক্স এবং ওয়াই এক্সিসের রেখা রয়েছে। এই এক্সিসের উপরে এবং নিচে কাল রঙের রেখা আছে যা ফন্টের উচ্চ এবং নিন্ম সীমা নির্ণয় করে। এছাড়াও ডানের সীমা নির্ণয়ের আরেকটি কাল রেখা আছে যা ইচছামত সরানো যায়। এই চার রেখার মাঝে আপনাকে A আকঁতে হবে। (রেখার বাইরে আকাঁ অংশ থাকলে ফন্ট ব্যবহারের সময় পরবর্তী বর্ণের মধ্যে যুক্ত হয়ে যাবে) আকাঁ শেষে উইন্ডোটি বন্ধ করুন। এভাবে প্রতিটি বর্ণ আকঁতে হবে (বিশেষ করে A-Z, a-z, 0-9 এবং অন্যান্য বিশেষ সিম্বল যা কীবোর্ডে রয়েছে)। সমস্ত (ক্যারেক্টার বলতে আমরা যে বর্ণগুলোকে বুঝি সেগুলো হলেও চলবে) গ্লিফ আকাঁ হলে সেভ করে ইনষ্টল করুন। তবে এখান থেকে সরাসরি ফন্ট ইনষ্টল করা যায় ফন্ট মেনু থেকে Install এ ক্লিক করে।

সিম্বল ফন্ট তৈরী করাঃ সিম্বল তৈরী করা তুলনামুলক সহজ কারণ এতে .notdef এবং space তৈরী করার প্রয়োজন হয় না এবং বাকী গ্লিফগুলো ইচ্ছামত তৈরী করা যায়। এবার প্রথম দিকের গ্লিফটি সিলেক্ট করে পূর্বের মতো সিম্বল আকুঁন। আর আপনি যদি সিম্বল হিসাবে আপনার ছবি যুক্ত করতে চান তাহলে টুলস মেনু থেকে Import Image -এ কিক করুন তাহলে Import Image ডায়ালগ বক্স আসবে। এখন Load বাটনে ক্লিক করে পছন্দের ছবি সিলেক্ট করে ওপেন করুন। এখন ছবিটি ফন্ট হিসাবে কেমন হবে তা ডান দিকে দেখা যাবে। ছবিটি সঠিক ভাবে নেবার জন্য Threshold এর মান কম বেশী করুন প্রয়োজনে Smooth Filter এর মান পরিবর্তন করতে পারেন। ছবির সিম্বল পছন্দমত করে Generate বাটনে ক্লিক করলে ছবিটি উক্ত গ্লিফে আসবে। এবার গ্লিফটি দু’বার ক্লিক করে গ্লিফ ইন্ডেক্স থেকে ছবিটি ছোট বা বড় করে নিন এছাড়াও ইচ্ছামত ছবিটি ছাটতে বা কোন অংশ যোগ করতে পারেন। এভাবে আপনার ইচ্ছামত কতগুলো গ্লিফে সিম্বল তৈরী করুন। এবার ফন্টটি ইনষ্টল করে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ওপেন করে সিম্বল ইনসার্ট করে নিন পছন্দের সিম্বল। তবে মনে রাখা দরকার আলাদা সিম্বল ফন্ট তৈরী না করেও ক্যারেক্টার ফন্টে অতিরিক্ত গ্লিফ নিয়ে তাতে সিম্বল তৈরী করা যা। ফলে একই সাথে উভয় ফন্টের সুবিধা পাবেন। এভাবে আপনি বাংলা ফন্টও তৈরী করতে পারবেন। তবে বাংলা ফন্ট তৈরী করা বেশ জটিল, কারণ বাংলা বর্ণমালায় বর্ণের সংখ্যা বেশী এবং যুক্ত বর্ণ রয়েছে। তাই বাংলা ফন্ট তৈরীর আগে অন্য যে কোন বাংলা ফন্ট ওপেন করে দেখে নিতে পারেন।

২ Comments on "ফন্ট তৈরীর কলাকৌশল"

Leave a Reply to banglanewsCancel reply

×
কপিরাইট © ২০০৬-২০২৪ সমকাল দর্পণ. সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েল টেকনোলজিস